Tumgik
#শান্তি ও ভালবাসার ইসলাম
khutbahs · 4 years
Photo
Tumblr media
Preach and teach the Islamic doctrine of peace and love
#Media enable us to reach out to the entire world. We can utilize them to #spread the #true_message_of_Islam, to preach and teach the Islamic doctrine of peace and love, and to promote our beloved Prophet (PBUH)'s SUNNAH.
https://www.youtube.com/watch?v=96JClilZPf8
0 notes
Photo
Tumblr media
সাহিত্যের সংলাপ এবং ধর্মগুলির সহনশীলতা আমার লক্ষ্য ছিল ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদী ধর্মের ভারসাম্য রক্ষা করা নয়, কারণ আমি এমন একজন মুসলমান যে মুহাম্মদের নবুওয়াতকে ণী করে দিয়েছি, তাঁর উপর সর্বোত্তম, শান্তি ও আশীর্বাদ রয়েছে।  সমস্ত মানবতাকে স্বর্গের বাণীগুলির আধিপত্যকে প্রমাণ করার জন্য এবং আমাদের সমাজকে সমস্ত ধর্ম-অশুদ্ধি ও খারাপ প্রকাশ থেকে পবিত্র করে তুলেছে যারা তাদের ধর্মকে অশ্রদ্ধ করার আগে তাদের ত্রুটিমুক্ত করেছিল এবং wordsশ্বর তাদের কথা ও কাজের মধ্য দিয়ে একটি সত্য ধার্মিক আচরণ, উচ্চ নৈতিকতা ও সম্মানজনক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে সত্যকে প্রকাশ করেছেন they  তাদের কাছে, এবং তাদের ধর্মকে মিথ্যা ও অসত্য রূপে দেখানোর জন্য তাদের অজ্ঞতা ও বোকামির কারণে এবং thatশ্বরের পক্ষে, যিনি নবী, রসূল এবং বই প্রেরণ করেছেন, সমস্ত মানুষের জন্য সমস্ত মঙ্গল, কারণ, সমস্ত ন্যায়বিচার, করুণা, সহযোগিতা এবং ভালবাসার কারণ নিশ্চিত করেছেন, কারণ Godশ্বরের ধর্মগুলি একত্রিত হয়েছে এবং বিভক্ত নয়,  Iteক্যবদ্ধ এবং বিভ্রান্ত নয়, শক্তিশালী ও দুর্বল নয়, সহিষ্ণু ও ধর্মান্ধতা নয়, উত্সাহী এবং অবতরণ করবেন না, যিনি সর্বশক্তিমান Godশ্বরের একত্বের জন্য এবং সম্মানিত রাসূলদের সৎতার পক্ষে সর্বাধিক বিশিষ্ট প্রমাণ, যাঁরা তাদের স্রষ্টার উপরে রিপোর্ট করেন, সংলাপের পদ্ধতি, বিতর্ক ও আলোচনার জন্য on  মানসিক দৃiction়তা, মানসিক স্বাচ্ছন্দ্য এবং মানসিক আশ্বাসের বাইরে সত্যের কাছে পৌঁছানো একজন ব্যক্তিকে তার বিশ্বাসের উপর অবিচল থাকা অবস্থায় তার জীবনযাপন করতে সক্ষম করে তোলে, তবে তাদের ধর্মের বিষয়ে এবং তাদের পার্থিব বিষয়গুলির মধ্যে মানুষের পার্থক্য একটি পুরানো বিষয় এবং betweenশ্বর পৃথিবী ও তার উপরের লোকদের উত্তরাধিকারী না হওয়া পর্যন্ত মানুষের মধ্যে এই পার্থক্য থাকবে।  এটি নোবেল কুরআন দ্বারা বহু আয়াতে নিশ্চিত হওয়া সত্য এবং এটি থেকে (সূরা হুড আয়াত ১১৮; ১১৯) বলা হয়েছে, যেখানে Almightyশ্বর সর্বশক্তিমান বলেছেন (যদি আপনার পালনকর্তা মানুষকে একট�� একক জাতী করে তোলেন এবং তারা এখনও পৃথক;  যারা আপনার পালনকর্তার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং সে কারণেই তিনি তাদের সৃষ্টি করেছেন) এবং লোকেরা এখনও তাদের চিন্তাভাবনা, দিকনির্দেশ, উদ্দেশ্য এবং আশাগুলির মধ্যে পৃথক, যারা আপনার পালনকর্তার রহমতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল, সুতরাং তারা তাঁর অনুগ্রহকে অনুসরণ কর, এবং আমি জানি যে divineশিক জ্ঞান তাঁর করুণা এবং সমস্ত কিছুকে প্রসারিত করে, যতক্ষণ না তারা আমার কাছে পৌঁছানোর পক্ষে মতভেদ করেছিল।  সত্য এবং ন্যায়পরায়ণতা এবং এই পার্থক্যগুলির অনেকগুলি বিভিন্ন কারণে রয়েছে (নিন্দনীয় ধর্মান্ধতা, এবং আবেগ এবং ব্যক্তিগত সুবিধাগুলির কাছে জমা দেওয়া, নির্বীজ অনুকরণ, নিপীড়ন এবং আগ্রাসনের প্রতি, খ্যাতি এবং অভিমানের প্রতি ভালবাসা, বক্তৃতার মাধ্যমে অস্তিত্ব প্রমাণিত করা, নেতৃত্ব এবং শক্তি এবং মায়া নিয়ন্ত্রণের ভালবাসা, বিভিন্ন মনের কাছে)।  এবং বুঝতে পেরেছি, তাদের মতভেদ ছিল তাঁর নার্ভাসনেস, একগুঁয়েমি ও ক্ষোভ, এবং এ কারণেই আমি ধর্মের বিদ্বান, রাষ্ট্রপতি, শাসক এবং বিশ্বের বাদশাহদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, কিন্তু পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তি ন্যায়বিচারের জন্য মানবজাতির পক্ষে উপকারী যে সঠিক বিজ্ঞান ছড়িয়ে দিতে সহযোগিতা করার জন্য, কারণ বিজ্ঞানের মতো বৃষ্টি তার দ্বারা কোনও ভাল, শুদ্ধ ভূমি এবং তেমনি উপকারে আসে না।  সত্য ধর্মীয় জ্ঞান কেবল খাঁটি আত্মা, খাঁটি অন্তর এবং সচেতন অন্তরযুক্তদেরই উপকার করে থাকে, এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর উপর বিশ্বাস রাখেন, তিনি যদি বিশ্বাস করেন ((জ্ঞান হ'ল দু'টি জ্ঞানই হ'ল জ্ঞান হ'ল)  PBUH, এবং আলি জিহ্বার জ্ঞান, এটি Godশ্বর আলি ইবনে আদমের যুক্তি))) এবং Godশ্বর সাহায্যকারী
0 notes
bangladaily · 4 years
Text
কেন ইসলাম গ্রহন করলেন গ্যাব্রিয়েল, জানালেন নিজেই
Tumblr media
বিনোদনঃ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন কানাডার মডেল রোজি গ্যাব্রিয়েল। তিনি একজন পর্যটকও। ধর্ম পরিবর্তনের মতো এত বড় সিদ্ধান্ত কেন নিলেন সেটাও জানালেন নিজেই। গত বছর পাকিস্তান ভ্রমণে গিয়েছিলেন রোজি গ্যাব্রিয়েল। এরপর চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি নিজের ইনস্টাগ্রাম পেজে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘোষণা দেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি পোস্ট করেন রোজি। যেখানে তাকে মাথায় ওড়না ও সালোয়ার কামিজ পরিহিত হাস্যজ্জ্বল দেখা যাচ্ছিল। এছাড়া তার হাতে ‘দ্য ম্যাসেজ অব কোরআন’ নামে একটি বই ছিল। কেন মুসলমান হয়েছেন সে বিষয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই কানাডিয়ান মডেল ও পর্যটক। ইনস্টাগ্রামে রোজি লিখেন, ‘গত বছর আমার জীবনের কঠিনতম বছর ছিল। জীবনের সমস্ত চ্যালেঞ্জ আমাকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে। আমি ছোটবেলা থেকেই সৃষ্টিকর্তা আর তার সৃষ্টি নিয়ে ভাবতাম। সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনুভব করতাম। কিন্তু আমার পথ কঠিন ছিল। সারা জীবন প্রচুর কষ্ট পেয়েছি। কষ্ট পেলে ক্ষোভ থেকে সৃষ্টিকর্তাকে প্রশ্ন করতাম, কেন আমাকে তিনি কষ্ট দিচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পেরেছি যে, সব কিছুই নির্ধারিত। এমনকি আমার কষ্টগুলো আসলে তার দেয়া উপহার।’ কানাডিয়ান এই মডেল আরও বলেন, ‘আমি চার বছর আগে আমার ধর্ম বিষয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আমি আমার সাবেক ধর্মের নিন্দা করতাম। তবে আমি আধ্যাত্মিকতার পথ অবলম্বন করেছিলাম। সেই কৌতূহল এবং সংযোগটি আরও জোরদার হয়েছে। এখন আমার আর ভয় নেই। আর এভাবেই আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমি আমার সঠিক ধর্মকে আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছি।’ তিনি জানান, গত এক দশক ধরে মুসলিম দেশগুলো ভ্রমণ করে ইসলামকেই একমাত্র শান্তির ধর্ম বলে মনে হয়েছে। বলেন, ‘আমি মনে মনে শান্তি, ক্ষমা এবং সবার সঙ্গে সবচেয়ে গভীর সংযোগ চাইছিলাম। আর এভাবেই আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল। সৃষ্টিকর্তা আমাকে পাকিস্তানে নিয়ে এসেছিলেন। আমার বেদনা ও অহংকার দূর করে দিয়েছেন।’ ইসলাম যে শান্তির ধর্ম তার ব্যাখ্যায় রোজি গ্যাব্রিয়াল বলেন, দুর্ভাগ্যবশত পশ্চিমারা ইসলামকে ভুলভাবে উস্থাপন করছেন।তারা ইসলাম নিয়ে ভুল ধারণা পোষণ করছেন। তিনি বলেন, ‘সকল ধর্মের মতো ইসলামেও অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। ইসলামের আসল অর্থ শান্তি, ভালবাসা এবং একত্ববাদ। অন্য সব ধর্মও শান্তির বার্তা দেয়। কিন্তু ইসলাম শুধু ধর্ম নয়, একটি জীবনবিধান। যেটা মানবতার জীবন, নম্রতার জীবন এবং ভালবাসার জীবন। আমি এখন একজন মুসলমান। কলেমা শাহাদাতের মাধ্যমে আমি আল্লাহুর প্রতি নিজেকে উৎসর্গ করে শান্তির পথে জীবন কাটানোর শপথ নিয়েছি। এখন বিশ্বের জেগে ওঠা দরকার।’ -কেএম Read the full article
0 notes
dailynobobarta · 4 years
Text
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অহংকার মাজারুল ইসলাম শামীম ?
New Post has been published on https://is.gd/4DkY2l
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অহংকার মাজারুল ইসলাম শামীম ?
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি মাজারুল ইসলাম শামীম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্তর থেকে রাজপথ  ভেরে উঠা হাজারে ছাত্রলীগের কারীগর সারা বাংলার ছাত্রসমাজের অহংকার তারূন্যের প্রতীক টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া রুপসা থেকে পাটুরিয়া বাংলার কোটি কোটি ছাত্রসমাজের প্রাণের স্পন্দন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ , কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সহ-সভাপতি মাজারুল ইসলাম শামীম ছাত্রসমাজের মাঝে হৃদয়ে ভালবাসার স্থান করে নিয়েছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছিল সময়ের সফল সাহসী সারথি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে আসুন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কলম ধরি জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত দেশ গড়ি। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে যাচ্ছে। ছাত্রলীগ সেই রূপকল্প বাস্তবায়নে নিজেদের নিয়োজিত করেছে। আর ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তাঁরই অনুপ্রেরণায় ছাত্রলীগের সকল সদস্য অতন্দ্র প্রহরীর মতো বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সহযোগী শক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।বৃটিশ শাসনের কবল থেকে মুক্ত হয়ে পাকিস্তানী পরাধীনতায় প্রবেশের এক বছর পরে অর্থাৎ ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করে বাঙালীর মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে রেখেছিলেন দুই যুগ। ইতিহাস সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন বাঙালির যা কিছু সোনালী অর্জন তার সবকিছুর গর্বিত অংশীদার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। আন্দোলন সংগ্রামের কাব্যিক পথচলার সূচনা ১৯৪৮ সালেই মাতৃভাষার পক্ষে আপোষহীন অবস্থান তৈরী করে। ভাষা আন্দোলনের সফলতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ছাত্রলীগ ১৯৫৬ সালে বাংলাকে মাতৃভাষার স্বীকৃতি আদায়, ৫৭ এর শিক্ষক ধর্মঘট এবং ৬২'র শিক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়। বাঙালির ম্যাগনাকার্টা খ্যাত ছয় দফা আন্দোলনে রাজপথে প্রথম সারিতে অবস্থান ছিল ছাত্রলীগের। ছাত্রলীগের নেতৃত্বেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার বিরুদ্ধে ছাত্র গণ-আন্দোলন গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এরপরে শুরু হয় মহান মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধে ১৭ হাজার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর দেশমাতৃকার তরে আত্মাহুতি বিশ্ব ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাসে বিরল। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ কালপূর্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের সংগ্রামে ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। জাতির জনক হত্যাকাণ্ডের পরে ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী সামরিক স্বৈরাচারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে পিতা হত্যার বিচার চেয়ে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ মুখোরিত করে রেখেছিল। ১৯৮১ সালে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর সামরিক শাসক জিয়ার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন স্লোগানে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তুলেছিল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেদিন দেশরত্নের আগমনে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছিল প্রতিটি নেতাকর্মীর হৃদয়ে। সামরিক শাসনের মধ্যেও ১৯৮৩ সালে শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের দশ দফা তৈরী হয় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতৃত্বে। এরশাদবিরোধী গণ-আন্দোলন, খালেদা নিজামী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে ছাত্রলীগের নাম ইতিহাসের পাতায় খোদাইকৃত থাকবে। বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ছাত্ররাজনীতিকে রক্ষার দ্বায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলো ছাত্রলীগ। সামরিক স্বৈরাচার জিয়া ও এরশাদ ছাত্ররাজনীতিকে অস্ত্র ও সন্ত্রাসনির্ভর বানিয়ে কলুষিত করার কূটকৌশল হাতে নিলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তখনো মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তিক ছাত্রআন্দোলনের পথেই হেটেছে নিঃসঙ্গ শেরপার ন্যায়। জিয়া এবং এরশাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছিলেন খালেদা-নিজামীও। ছাত্রদল-শিবির নামক পেটোয়া বাহিনী নামিয়ে দিয়ে তারা সারাদেশকে এক ভয়ের নগরীতে পরিণত করেছিলো। ছাত্রদল-শিবিরের অস্ত্রনির্ভর সন্ত্রাসী রাজনীতির বিপরীতে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কলম, খাতা, বই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শতশত নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে, চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করে নিয়েছে হাজারো নেতাকর্মী। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে আজকে সারাদেশের শিক্ষাঙ্গন সন্ত্রাসমুক্ত। গুলি-বোমার আওয়াজের পরিবর্তে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থীরা এখন কবিতা-গানে মুখোরিত। ক্যাম্পাসগুলো আজ আর ভয়ের নগরী নয়, প্রেম-ভালোবাসা-বিতর্কের নগরী। বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। দেশের তরুণ ও যুব সমাজকে আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পারদর্শী দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার পাশে থাকবে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে, যথার্থ ভ্যানগার্ডের ন্যায়। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় অন্যের দেখানো পথে হাটেনি ছাত্রলীগ, নিজের পথ সে নিজেই তৈরী করে নিয়েছে। আগামীর বাংলাদেশও তাই ছাত্রলীগের দেখানো পথেই হাটবে। সেই পথ হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভুদ্ধ জ্ঞাননির্ভর- মেধাভিত্তিক ছাত্র আন্দোলনের পথ।
0 notes
sentoornetwork · 4 years
Text
রিল আর রিয়্যালের “ট্র্যাজেডিকুইন” মীনাকুমারী
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/meena-kumari-tragedy-queen-of-bollywood/
রিল আর রিয়্যালের “ট্র্যাজেডিকুইন” মীনাকুমারী
শ্যামল কর
নিদারুণ আর্থিক কষ্টের মাঝে,পরিবারে দ্বিতীয় সন্তান মেয়ে জন্ম নিতেই,থিয়েটারে হারমোনিয়াম বাজানো সামান্য আয়ের পিতা আলিবক্স বিরক্ত হয়ে, মেহজবিনকে রেখে দিয়ে এলেন এতিমখানার বারান্দায়।তবে যতই হোক্ নিজের সন্তান তো, ধর্মভীরু মুসলমান আলিবক্স,আল্লার কোপে পড়ায় ভয়ে, আর নিজ সন্তানের টানে কিছুক্ষ্ণণ বাদেই আশ্রমের বারান্দা থেকে তুলে ঘরে ফিরিয়ে আনলেন সাত দিনের শিশুকে।কিন্তু সন্তানের প্রতি টান থাকলেও, অর্থের টানাটানিতে হিমশিম খাওয়া বাবা, মেয়েকে মানুষ করবেন কিভাবে? তাই, ছোট্ট মেয়ের হাত ধরে ঘুরতে লাগলেন, সিনেমা দুনিয়ায় তাঁর পরিচিত কিছু মানুষজনের কাছে,যদি কিছু কাজ জোটে।একদিন প্রকাশ স্টুডিওর মালিক,প্রযোজক-পরিচালক বিজয় ভাট,ডেকে পাঠান ওদের।
মেহজবিনের রাজকীয় নাম আর ফুটফুটে চেহারা দেখে, পছন্দ হয় তাঁর,একটা সু্যোগ করে দেন শিশু চরিত্রে অভিনয় করার, পারিশ্রমিক ২৫টাকা।১৯৩৯ সালে “লেদার ফেস” সিনেমা দিয়েই শুরু হলো ছবছরের বেবি মেহজবিনের অভিনয় জীবন।আসলে মেহজবিনের রক্তে ছিল, নাচ,গান বাজনা, অভিনয়। বাবা থিয়েটার জগতের মানুষ,মা ইকবাল বানুও নাটকের স্টেজে নাচ গান করতেন, দু/একটি নির্বাক সিনেমায় অভিনয়ও করেছিলেন।এই ইকবাল বানুর আসল নাম,প্রভাবতী দেবী, প্রভাবতীর মা হেমসুন্দরী ছিলেন,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রাতুষ্পুত্রী।বাল্যবিধবা হেমসুন্দরী,অল্প বয়সের বৈধব্য জীবনে অসন্তুষ্ট হয়ে মেরঠে চলে যান ও খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন এবং জনৈক পেয়ারিলালকে বিয়ে করেন।তাদের দুই মেয়ের,এক মেয়ে প্রভাবতী,যে পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আলিবক্সকে বিয়ে করেন। ফিরে আসি,মেহজবিনের কথায়, ‘লেদার ফেস’ সিনেমার পর ‘অধুরি কাহানী’ ‘পুজা’ ‘নয়ি রোশনি’ একের পর এক সিনেমায় কাজ পেতে থাকে মেহজনিন, তার রূপ,গুণ ও অভিনয় ক্ষমতার জোরে।পরে ‘এক হি ভূল’ সিনেমায়,বিজয় ভাট মেহজবিনের নাম পাল্টে, নতুন নাম রাখেন,”বেবি মীনা”। সেই ‘বেবি মীনা’ পরে সুপরিচিত,বিখ্যাত হয়ে উঠলেন “মীনা কুমারী” নামে। কবি-গীতিকার জাভেদ আখতার, পর��� খেদের সাথে বলেছিলেন, মেহজবিনের মতো এমন অপার্থিব নাম,বদল হয়ে হলো কিনা মীনা কুমারী! এর থেকে বড় ট্র্যাজেডি আর কি হতে পারে? সত্যিই তাই, মিনা কুমারীর সারা জীবনটাই বিষাদময়।জন্ম থেকেই দুর্ভগ্যের শিকার তিনি। নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে,শিশু মেহজবিন না পেয়েছে বাবার স্নেহ,মায়ের আদর, মাত্র ছবছর বয়সেই অভাব অনটনের সংসারের হাল ধরতে গিয়ে,পড়াশোনা করার সুযোগ হয়ে ওঠে নি। প্রতিষ্ঠা লাভের পর,কান্নাভেজা গলায় মীনা কুমারী বলেছিলেন,- আমি রূপকথা ভালবাসতাম,পড়তে চাইতাম, কিন্তু আমাকে রূপকথার দৃশ্যে নাচগান করতে হতো।স্কুল কলেজের পাঠ না পেলেও, তাঁর অদম্য ইচ্ছা ও একান্ত নি���ের প্রচেষ্টায় পরে তিনি অনেকগুলো কবিতা লিখেছিলেন,‘নাজ’ ছদ্মনামে,কবি হিসাবে পেয়েছিলেন স্বীকৃতি,ছিলেন সু-গায়িকাও।
নায়িকা হিসাবে মীনা কুমারীর যখন মধ্যগগন, সেসময়ে বিখ্যাত পরিচালক কামাল আমরোহির সাথে পরিচয়,প্রেম,প্রণয়,নিকাহ্‌।কিন্তু তা ঘটে নি নিষ্কন্টক ভাবে।তিন সন্তান সহ বিবাহিত কামালের খানদানি পরিবার ও পিতা আলিবক্সের ছিল ঘোর আপত্তি।প্রেম মহব্বত, বাধা বিপত্তি আপত্তি কিছুই মানে না। কিন্তু মনের মানুষের সাথে বিয়ে হয়েও সুখী হতে পারলেন না মীনা।রক্ষণশীল মানসিকতার কামালের কড়া শাসন, সন্দেহের নজর,বন্দী জীবন, এমন কি মাঝে মাঝে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে হতো মীনাকে।শেষে আর সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হলেন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে।মনে শান্তি নেই,রাতে ঘুম নেই, ধীরে ধীরে হয়ে পড়লেন অবসাদগ্রস্ত।অবসাদ কাটানো ও ঘুমের জন্য ডাক্তার পরামর্শ দিলেন, অল্প পরিমাণে ব্র্যন্ডি খাওয়ার। কিন্তু দিনে দিনে বেড়ে চলল মদের পরিমাণ, বাড়লো আসক্তি, হয়ে ঊঠলেন,মদ্যপ, পরে লিভার সিরোসিস।অসুস্থ অবস্থাতেও ডাক্তারের বারণ না মেনে চালিয়ে যেতে থাকেন অভিনয়।ধর্মেন্দ্রর সাথে তাঁর সম্পর্কের কথা শোনা গেলেও, পরিণতি লাভ করেনি। ১৯৭২ সালের্ ৪ঠা ফেব্রুয়ারী তাঁর শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা “পাকিজা”।আর তার দেড় মাস বাদে ৩১শে মার্চ, আরব সাগরে সূর্য অস্তমিত হওয়ার আগেই, অস্তাচলে গেল উজ্জ্বল নক্ষত্রের জীবন। মীনা কুমারীর জন্ম ১৯৩৩ সালের ১লা আগষ্ট, মৃত্যু ১৯৭২ সালের ৩১শে মার্চ।তাঁর মাত্র ৩৮ বছরের জীবনকালের মধ্যে ৩২ বছর অভিনয় জীবন, ৯০টারও বেশী সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন তিনি।কঠিন দারিদ্রতা কাটিয়ে পেয়েছিলেন,অর্থ,যশ, খ্যাতি, সাফল্য, জনপ্রিয়তা।এত কিছু পাওয়ার মাঝেও, তাঁর না-পাওয়ার জীবন। ভালবাসার কাঙাল মীনা কুমারী পান নি, মনের মানুষ,কাছের মানুষের ভালবাসা। মৃত্যুর পরের দিন সকালে, সে সময়ের আর এক তারকা নায়িকা, অভিনেত্রী নার্গিস লিখেছিলেন,- ‘মওত মুবারক হো।আর কখনও এ দুনিয়ায় জন্ম নিও না মেহজবিন’। আজ জন্মদিনে, ক্ষণজন্মা প্রতিভাময়ী অভিনেত্রীকে তাঁর গুণগ্রাহীদের পক্ষ থেকে ভালবাসা, কুর্নিশ,সেলাম জানাই। ‘ চলতে চলতে, ইঁউহি কোই মিল্‌ গয়্যা থা ।’
0 notes
gnews71 · 5 years
Photo
Tumblr media
ইসলাম আমার হৃদয়ের স্পন্দন :নওমুসলিম আমিনা পবিত্রতা ও শান্তি-পিয়াসি মানুষ ধর্মমুখি হচ্ছেন। ধর্ম মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। তাই তা ইতিহাস ও ভৌগোলিক সীমারেখার গণ্ডিতে সীমিত নয়। বরং ধর্ম নানা জাতি, গোত্র ও শ্রেণীর মধ্যে গড়ে তোলে ঐক্য ও সম্পর্ক। তাই যারা নিজের সত্য-পিয়াসি প্রকৃতির দিকে ফিরে যেতে চান ধর্ম তাদেরকে ফিরিয়ে দেয় পবিত্রতা ও শান্তি। আর এমনই পবিত্রতা ও শান্তি পাচ্ছেন সর্বশেষ এবং পরিপূর্ণ ঐশী ধর্ম ইসলামের মধ্যে ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’-র মত সত্য-পিয়াসি পশ্চিমা নাগরিকরা। পেশায় সাংবাদিক মিসেস ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ ছিলেন একজন গোঁড়া খ্রিস্টান ও খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি প্রচার করতেন খ্রিস্ট ধর্ম। তিনি মনে করতেন ইসলাম একটি কৃত্রিম ধর্ম এবং মুসলমানরা হল অনুন্নত ও পশ্চাদপদ একটি জাতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারের একটি ভুল তার জীবনের মোড় পুরোপুরি বদলে দেয়। বর্তমানে তিনি বিশ্ব মুসলিম নারী সমিতির সভানেত্রী হিসেবে মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষার কাজে মশগুল। খবর প্যরিস টুডে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের মানুষ। এক সময়ের খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক এই নারী আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বহু মানুষের মনে জ্বালাতে পেরেছেন ইসলামের প্রোজ্জ্বল ও প্রদীপ্ত আলোর শিখা। তিনি বলেছেন, “ইসলাম আমার হৃদয়ের স্পন্দন ও আমার শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত রক্ত-ধারা এবং আমার সমস্ত প্রেরণার উৎস হলো এই ইসলাম। এ ধর্মের সুবাদে আমার জীবন হয়েছে অপরূপ সুন্দর ও অর্থপূর্ণ। ইসলাম ছাড়া আমি কিছুই নই।” মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নতুন টার্মের ক্লাসে ভর্তি হওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে গিয়ে একটি ভুল বিষয়ের ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু এ সময় সফরে থাকায় তিনি তার ওই ভুল বুঝতে পারেননি। পরে যখন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন জানতে পারেন যে ওই বিষয়ের ক্লাসে যোগ দেয়া ছাড়া তার জন্য অন্য কোনো উপায় নেই। আর ওই ক্লাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই আরব মুসলমান। যদিও মিসেস অ্যাসিলিমি আরব মুসলমানদের ঘৃণা করতেন কিন্তু বৃত্তির অর্থ বাঁচানোর জন্য তাদের সহপাঠী হওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না তার। এ অবস্থায় তার মন খুব বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু তার স্বামী যখন বললেন, হয়ত স্রস্টা এটাই চেয়েছিলেন এবং তিনি হয়তো তোমাকে আরব মুসলমানদের মধ্যে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের জন্য মনোনীত করেছেন; তখন খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়েই মিসেস অ্যাসিলিমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ক্লাসে গেলেন। মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলমান সহপাঠীদের সঙ্গে যোগাযোগ হলেই নানা অজুহাতে তাদের কাছে খ্রিস্ট ধর্মের দাওয়াত দিতেন মিসেস অ্যাসিলিমি। তিনি তাদের বলতেন, ঈসা মাসিহ’র অনুসরণের মাধ্যমে তারা যেন নিজেদের মুক্তি নিশ্চিত করেন। কারণ, ঈসা মাসিহ মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্যই নিজেকে উতসর্গ করেছেন। অবশ্য তারাও অর্থাত আরব মুসলিম শিক্ষার্থীরাও বেশ ভদ্রতা ও সম্মান দেখিয়ে মিসেস অ্যাসিলিমির কথা শুনতেন। কিন্তু তাদের মধ্যে এইসব কথার কোনো প্রভাব পড়ত না। এ অবস্থায় মিসেস অ্যাসিলিমি ভিন্ন পথ ধরতে বাধ্য হন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিলাম মুসলমানদের বই-পুস্তক দিয়েই তাদের কাছে এ ধর্মের ভুল চিন্তা-বিশ্বাস প্রমাণ করব। এই উদ্দেশ্যে আমার বন্ধুদের বললাম তারা যেন আমার জন্য পবিত্র কুরআনের একটি কপিসহ কিছু ইসলামী বই-পুস্তক নিয়ে আসেন যাতে এটা দেখানো যায় যে ইসলাম ধর্ম একটি মিথ্যা ধর্ম এবং তাদের নবীও আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ নয়।” এভাবে মার্কিন সাংবাদিক মিসেস অ্যাসিলিমি বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া পবিত্র কুরআন পড়া শুরু করেন। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে পাওয়া দুটি ইসলামী বইও পড়েন তিনি। এ সময় তিনি ইসলামী বই-পুস্তক পড়ায় এত গভীরভাবে নিমজ্জিত হন যে দেড় বছরের মধ্যে তিনি ১৫টি ইসলামী বই পড়েন ও পবিত্র কুরআনও দুই বার পড়া শেষ করেন। চিন্তাশীল হয়ে ওঠা মিসেস অ্যাসিলিমি বদলে যেতে থাকেন। মদপান ও শুকরের মাংস খাওয়া ছেড়ে দেন তিনি। সব সময়ই পড়া-শুনায় মশগুল থাকতেন এবং নারী ও পুরুষের অবাধ-মেলামেশার সুযোগ থাকত এমন সব পার্টি বা উৎসব অনুষ্ঠান বর্জনের চেষ্টা করতেন। সে সময়কার অবস্থা প্রসঙ্গে মিসেস অ্যাসিলিমি বলেছেন, “কখনও ভাবিনি যে ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করতে গেলে বিশেষ ঘটনা ঘটবে এমনকি আমার প্রাত্যহিক জীবন-ধারাও বদলে যাবে। সে সময়ও এটা কল্পনাও করতে পারিনি যে খুব শিগগিরই আমি আমার হৃদয়ের প্রশান্তির পাখাগুলো ও ঘুমিয়ে থাকা ঈমান নিয়ে ইসলামী বিশ্বাসের সৌভাগ্যের আকাশে উড্ডয়ন করব।” এর পরের ঘটনা বলতে গিয়ে মিসেস অ্যাসিলিমি বলেছেন, আমার আচরণে কিছু পরিবর্তন আসা সত্ত্বেও নিজেকে তখনও খ্রিস্টানই মনে করতাম। একদিন একদল মুসলমানের সঙ্গে সংলাপের সময় আমি যতই তাদের প্রশ্ন করছিলাম তারা অত্যন্ত দৃঢ়তা ও দক্ষতার সঙ্গে সেসবের জবাব দিচ্ছিলেন। পবিত্র কুরআন সম্পর্কে আমার অদ্ভুত সব মন্তব্য ও বক্তব্যের জন্য তারা আমাকে একটুও পরিহাস করেননি। এমনকি ইসলাম সম্পর্কে আমার তীব্র আক্রমণাত্মক বক্তব্য শুনেও তারা মোটেও দুঃখিত ও ক্রুদ্ধ হননি। তারা বলতেন, জ্ঞান মুসলমানের হারানো সম্পদ। আর প্রশ্ন হল জ্ঞান অর্জনের একটি পথ। তারা যখন চলে গেলেন মনে হল আমার ভেতরে যেন কিছু একটা ঘটে গেছে। এরপর থেকে মুসলমানদের সঙ্গে মার্কিন সাংবাদিক মিসেস অ্যাসিলিমির যোগাযোগ বাড়তে থাকে। আমি যখনই নতুন কোনো প্রশ্ন করতাম তখনই তারা আমার কাছে আরো কিছু নতুন প্রসঙ্গ তুলে ধরতেন। এ অবস্থায় একদিন একজন মুসলিম আলেমের সামনে সাক্ষ্য দিলাম: “আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।–আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু বা উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর রাসূল।” মুসলমান হওয়ার পর হিজাব বা পর্দা বেছে নেন মিসেস অ্যাসিলিমি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ও সন্তানের মালিকানারও প্রশ্ন চলে আসে। এমনকি বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিচারক তাকে তার দুই সন্তান ও ইসলামের মধ্যে যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বললে মহাদ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েন মিসেস অ্যাসিলিমি। একজন মমতাময়ী মায়ের জন্য সন্তানের দাবী ত্যাগ করা তো দূরের কথা, তাদের কাছ থেকে একদিনের জন্য দূরে থাকাও অশেষ কঠিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসলামের প্রতি ও মহান আল্লাহর প্রতি ভালবাসার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মার্কিন নও-মুসলিম মিসেস অ্যাসিলিম��। আসলে ওই অবস্থায় দুই বছর ধরে ইসলাম সম্পর্কে তার গবেষণা ও আল্লাহর ওপর নির্ভরতাই তাকে শক্তি যুগিয়েছে। তার মনে পড়ে কুরআনে উল্লেখিত হযরত ইব্রাহীম (আ.)’র সন্তান কুরবানি দেয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশ পালনের ঘটনা। মনে পড়ে কুরআনের এই আয়াত: “যে ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হতে পারে, যে আল্লাহর ক্রোধ অর্জন করেছে? বস্তুতঃ তার ঠিকানা হল দোযখ। আর তা কতইনা নিকৃষ্ট অবস্থান!” মার্কিন নও-মুসলিম মিসেস অ্যাসিলিমি মুসলমান হওয়ার পর আমেরিকায় ইসলাম প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। কয়েক বছরের প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি মুসলমানদের জন্য আরবী ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছার সরকারি স্ট্যাম্প প্রকাশ করতে মার্কিন সরকারকে সম্মত করেন। মিসেস আমিনা অ্যাসিলিমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ও শহরে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তার অনুভূতি তুলে ধরে বক্তব্য বা ভাষণ দিয়েছেন। হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে-আসা এইসব ভাষণ শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এইসব প্রচেষ্টার অন্যতম সুফল হিসেবে একদিন তার দাদী ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর তার বাবা, মা ও বোনও মুসলমান হন। এর কিছু কাল পর তার সাবেক স্বামীও জানান যে তিনি চান তাদের মেয়েরা মায়ের ধর্মই অনুসরণ করুক। তিনি মেয়েদেরকে কেড়ে নেয়ার জন্য সাবেক স্ত্রী তথা অ্যাসিলিমির কাছে ক্ষমাও চান। আর অ্যাসিলিমিও তাকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের অপরাধে একদিন যারা তাকে ত্যাগ করেছিল তারা সবাই তাদের ভুল বুঝতে সক্ষম হয় ও সত্যকে স্বীকার করে নেয়। প্রাণপ্রিয় সন্তানদের ফিরে পাওয়াকে অ্যাসিলিমি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য আরও একটি বড় বিজয় বলে মনে করেন। এভাবে আল্লাহ যাকে চান তাকে ঈমানের মহাসম্পদে সমৃদ্ধ করেন। তিনি জানেন কারা সত্যের ও আল্লাহর প্রেমিক।
0 notes
pinknutreview · 6 years
Text
মহান বিজয় দিবস আজ
মহান বিজয় দিবস আজ
ফারাজী আজমল হোসেন
আজ ১৬ ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস। বাঁধভাঙা আনন্দের দিন। বাঙালি জাতির জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জনের দিনটি আজ। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণের দিন। পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ, নিপীড়ন আর দুঃশাসনের জাল ভেদ করে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিজয়ের প্রভাতী সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করে উঠেছিল বাংলাদেশের শিশির ভেজা মাটি। অবসান হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর সাড়ে তেইশ বছরের নির্বিচার শোষণ, বঞ্চনা আর নির্যাতনের কালো অধ্যায়।
প্রায় ৯২ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের ঐতিহাসিক রোসকোর্স ময়দানে (বর্তমান  সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণের মাধ্যমে সূচিত হয়েছিল এই মহেন্দ্রক্ষণ। হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মরণপণ লড়াই করে এইদিনই বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে এনেছিল লাল-সবুজের পতাকা। পৃথিবীর বুকে সৃষ্টি হয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
বিজয়ের ৪৬ বছর পূর্ণ হল আজ। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর লাখো প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের আজকের দিনে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধা আর ভালবাসার সঙ্গে স্মরণ করবে সেইসব শহীদদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের প্রিয় স্বাধীনতা। স্মরণ করবে সেইসব বীর সেনানীদের যারা শোষণ বঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে অনাগত ভবিষ্যত্ প্রজন্মের জন্য একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দেয়ার জন্য প্রাণের মায়া ত্যাগ করে লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। যেসব নর-নারীর সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সম্মান জানানো হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্ততি নেওয়া হয়েছে।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা না দেখিয়ে পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভকারী আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা তুলে দিতে টালবাহানা শুরু করে শাসক গোষ্ঠী। ফলে ক্ষোভে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান। একাত্তরের ৭ মার্চ তত্কালীন রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’ জনগণের স্বাধীনতার স্পৃহাকে প্রবল করে তোলে। ঢাকা যখন অগ্নিগর্ভ, তখন পাকিস্তানি শাসকচক্র আমাদের মুক্তির স্পৃহাকে দমনের পথ বেছে নেয়। রাতের অন্ধকারে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে জন্ম দিল ২৫ মার্চের কালরাত্রি। এরপরই চূড়ান্ত হয়ে যায় আমাদের পৃথক পথচলার যাত্রা। ওদের সাথে আর নয়। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হল চূড়ান্ত লড়াই। দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিসংগ্রামের পর পরাজয় মেনে নেয় পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে রেসকোর্স ময়দানে (সোহরাওয়াদী উদ্যান) ৯১ হাজার ৪৯৮ জন নিয়মিত অনিয়মিত এবং আধা সামরিক সৈন্য নিয়ে ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জেনারেল আমীর আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেন সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরা’র কাছে। শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পথচলা।
কর্মসূচি
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি কূটনীতিকবৃন্দ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমন্ত্রিত সদস্যগণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে প্র��ানমন্ত্রী গণভবনে বিজয় দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করবেন। সকাল সাড়ে ১০টায় তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম ভিত্তিক যান্ত্রিক বহর প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ উপস্থিত থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। প্রধানমন্ত্রীও কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সন্ধ্যা ৭টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপসমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিভিন্ন বাহিনীর বাদক দল বাদ্য বাজাবেন। দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্রসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রচার করবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশুদের চিত্রাঙ্কন, রচনা ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের আয়োজন করবে। এছাড়া মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেশের শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে এবং এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, হাসপাতাল, জেলখানা, সরকারি শিশুসদনসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। দেশের সকল শিশু পার্ক ও জাদুঘরসমূহ বিনা টিকিটে উন্মুক্ত রাখা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অনুরূপ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস সমূহে দিবসের তাত্পর্য তুলে ধরে কর্মসূচি পালন করা হবে। বিকাল পৌনে ৪টায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিলিত হবেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি
আওয়ামী লীগের গৃহীত তিন দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সূর্যোদয় ক্ষণে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারাদেশের সংগঠনের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন, সকাল ৮টায় ধানমন্ডিস্থ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন, সকাল ১০টায় টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, জিয়ারত, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। এছাড়া বিকাল ৩টায় নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজয় শোভাযাত্রা নিয়ে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত এবং সেখানে স্থাপিত শিখা চিরন্তনে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে বিজয় শোভাযাত্রা।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বাণীতে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো বেশি অবদান রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাবো আসুন, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ও চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরো বেশি অবদান রাখি, দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নেই সমৃদ্ধ আগামীর পথে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি আজ বিনম্র চিত্তে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
৪৭তম মহান বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বিজয়ের এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। স্মরণ করেন জাতীয় চার নেতা, ত্রিশ লক্ষ শহীদ এবং দুই লক্ষ মা-বোনকে, যাঁদের অসামান্য আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন বাংলাদেশ।
জেপি’র বিবৃতি
জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১৯৭১ সালে ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে এক ঐতিহাসিক ও অবিস্মরণীয় বিজয়ের মাধ্যমে বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন ও প্রত্যাশার বাস্তবায়ন ঘটে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নিঃশর্ত আত্ম-সমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হয় দখলদার মুক্ত। বিজয়ের এই মহান লগ্নে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
জেপি’র নেতৃদ্বয় বলেন, বিজয়ের এই মহান দিনে বাঙালি জাতির এই স্বাধীন আবাস ভূমিতে আমাদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হবে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃি্দ্ধর জনপদ হিসাবে গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ।
জেপি’র কর্মসূচি
মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টির (জেপি) পক্ষ থেকে দুই দিনের বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় জেপি’র সকল কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় সাভারস্থ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। জেপি’র দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচির মধ্যে ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি কনফারেন্স রুমে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় পার্টির (জপি) চেয়ারম্যান এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি। সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম। এছাড়া জাতীয়  নেতৃবৃন্দ, বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করবেন। 
এছাড়া জাতীয় পার্টি (জাপা), ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, সিপিবি, সাম্যবাদী দল, গণফোরাম বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং অগণিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
বিরোধী দলীয় নেতার বাণী
জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ দেশবাসীকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণিতে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিসীম ত্যাগ ও বীরত্ব গাঁথা চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, বাঙালি জাতি  যত দিন বেঁচে থাকবে, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গৌরব ও অহংকার করবে।
ইত্তেফাক/রেজা
(function() { var referer="";try{if(referer=document.referrer,"undefined"==typeof referer)throw"undefined"}catch(exception){referer=document.location.href,(""==referer||"undefined"==typeof referer)&&(referer=document.URL)}referer=referer.substr(0,700); var rcel = document.createElement("script"); rcel.id = 'rc_' + Math.floor(Math.random() * 1000); rcel.type = 'text/javascript'; rcel.src = "http://ift.tt/2l0BMcM"+rcel.id+"&c="+(new Date()).getTime()+"&width="+(window.outerWidth || document.documentElement.clientWidth)+"&referer="+referer; rcel.async = true; var rcds = document.getElementById("rcjsload_83982d"); rcds.appendChild(rcel); })();
© ittefaq.com.bd
from The Daily Ittefaq :: The Daily Ittefaq RSS Feed RSS http://ift.tt/2jZ3Iux via IFTTT
0 notes
paathok · 7 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on http://paathok.news/18126
ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস
Tumblr media Tumblr media
আ.স.ম শোয়াইব আহমাদ।
Tumblr media
.
ভালবাসার পরিচয়:
‘ভালবাসা’ এক পবিত্র জিনিস যা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর পক্ষ হতে আমরা পেয়েছি। ভালবাসা’ শব্দটি ইতিবাচক। আল্লাহ তা‘আলা সকল ইতিবাচক কর্ম-সম্পাদনকারীকে ভালবাসেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ وَأَحْسِنُوا إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ
‘‘এবং স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না। তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুহসিনদের ভালবাসেন।’’(সূরা আল-বাকারা:১৯৫)
ভুলের পর ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং পবিত্রতা অবলম্বন করা এ দুটিই ইতিবাচক কর্ম। তাই আল্লাহ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকেও ভালবাসেন। আল্লাহ বলেন,
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন।’’(সূরা আল-বাকারা:২২২)
তাকওয়া সকল কল্যাণের মূল। তাই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে খুবই ভালবাসেন। তিনি বলেন,
فَإِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِين
‘‘আর নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’’(সূরা আল ইমরান:৭৬)
পবিত্র এ ভালবাসার সাথে অপবিত্র ও নেতিবাচক কোন কিছুর সংমিশ্রণ হলে তা আর ভালবাসা থাকে না, পবিত্রও থাকে না; বরং তা হয়ে যায় ছলনা,শঠতা ও স্বার্থপরতা।
ভালবাসা, হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য সুতোর টান। কোন দিন কাউকে না দেখেও যে ভালবাসা হয়; এবং ভালবাসার গভীর টানে রূহের গতির এক দিনের দূরত্ব পেরিয়েও যে দুই মুমিনের সাক্ষাত হতে পারে তা ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার এক বর্ণনা থেকে আমরা পাই। তিনি বলেন,
النعم تكفر والرحم تقطع ولم نر مثل تقارب القلوب
‘‘কত নি‘আমতের না-শুকরি করা হয়, কত আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়, কিন্তু অন্তরসমূহের ঘনিষ্ঠতার মত (শক্তিশালী) কোন কিছু আমি কখনো দেখি নি।’’(ইমাম বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ :হাদীস নং২৬২)
ভালবাসার মানদণ্ড:
কাউকে ভালবাসা এবং কারো সাথে শত্রুতা রাখার মানদণ্ড হলো একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে এবং শত্রুতাও যদি কারো সাথে রাখতে হয়, তাও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই। এটাই শ্রেষ্ঠ কর্মপন্থা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِنَّ أَحَبَّ الْأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ الْحُبُّ فِي اللَّهِ وَالْبُغْضُ فِي اللَّهِ ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারো সাথে শত্রুতা রাখা।’’(আহমদ, মুসনাদুল আনসার, হাদিস নং২০৩৪১) ঈমানের পরিচয় দিতে হলে, কাউকে ভালবাসবার আগে আল্লাহর জন্য হৃদয়ের গভীরে সুদৃঢ় ভালবাসা রাখতে হবে। কিছু মানুষ এর ব্যতিক্রম করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَمِنْ النَّاسِ مَنْ يَتَّخِذُ مِنْ دُونِ اللَّهِ أَندَادًا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ اللَّهِ وَالَّذِينَ آمَنُوا أَشَدُّ حُبًّا لِلَّهِ ‘‘আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালবাসার মত তাদেরকে ভালবাসে; কিন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি ভালবাসায় তারা সুদৃঢ়।’’(সূরা আল-বাকারা:১৬৫) শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে, নতুবা কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ثَلَاثٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ وَجَدَ حَلَاوَةَ الْإِيمَانِ أَنْ يَكُونَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا سِوَاهُمَا وَأَنْ يُحِب��ّ الْمَرْءَ لَا يُحِبُّهُ إِلَّا لِلَّهِ وَأَنْ يَكْرَهَ أَنْ يَعُودَ فِي الْكُفْرِ كَمَا يَكْرَهُ أَنْ يُقْذَفَ فِي النَّارِ ‘‘তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা। ৩. কুফুরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।’’(বুখারী, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং:১৫)
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসার ফযীলত
আল্লাহ রাব্বুল ইয্‌যতের মহত্ত্বের নিমিত্তে যারা পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপন করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি তাঁর রহমতের ছায়ায় জায়গা দেবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِنَّ اللَّهَ يَقُولُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَيْنَ الْمُتَحَابُّونَ بِجَلَالِي الْيَوْمَ أُظِلُّهُمْ فِي ظِلِّي يَوْمَ لَا ظِلَّ إِلَّا ظِلِّي ‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার মহত্ত্বের নিমিত্তে পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপনকারীরা কোথায় ? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় ছায়া দান করব। আজ এমন দিন, যে দিন আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া নেই।’’মুসলিম, কিতাবুল বিররি ওয়াস-সিলাহ, হাদিস নং৪৬৫৫) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, إِنَّ مِنْ عِبَادِ اللَّهِ لَأُنَاسًا مَا هُمْ بِأَنْبِيَاءَ وَلَا شُهَدَاءَ يَغْبِطُهُمُ الْأَنْبِيَاءُ وَالشُّهَدَاءُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِمَكَانِهِمْ مِنَ اللَّهِ تَعَالَى قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ تُخْبِرُنَا مَنْ هُمْ قَالَ هُمْ قَوْمٌ تَحَابُّوا بِرُوحِ اللَّهِ عَلَى غَيْرِ أَرْحَامٍ بَيْنَهُمْ وَلَا أَمْوَالٍ يَتَعَاطَوْنَهَا فَوَ اللَّهِ إِنَّ وُجُوهَهُمْ لَنُورٌ وَإِنَّهُمْ عَلَى نُورٍ لَا يَخَافُونَ إِذَا خَافَ النَّاسُ وَلَا يَحْزَنُونَ إِذَا حَزِنَ النَّاسُ.. ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নবীও নয় শহীদও নয়; কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে তাঁদের সম্মানজনক অবস্থান দেখে নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষান্বিত হবে। সাহাবিগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আমাদেরকে বলুন, তারা কারা ? তিনি বলেন, তারা ঐ সকল লোক, যারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একে অপরকে ভালবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন রক্ত সম্পর্কও নেই, এবং কোন অর্থনৈতিক লেন-দেনও নেই। আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় তাঁদের চেহারা হবে নূরানি এবং তারা নূরের মধ্যে থাকবে। যে দিন মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে,সে দিন তাঁদের কোন ভয় থাকবে না। এবং যে দিন মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে, সে দিন তাঁদের কোন চিন্তা থাকবে না..।’’(সুনানু আবী দাঊদ, কিতাবুল বুয়ূ‘, হাদিস নং ৩০৬০)
পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি করার উপায়
ইসলাম বলে, পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপিত না হলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যায় না, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করা যায় না, এমনকি জান্নাতও লাভ করা যাবে না। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার পন্থা বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, لَا تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلَا تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا أَوَلَا أَدُلُّكُمْ عَلَى شَيْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلَامَ بَيْنَكُمْ..* ‘‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপন করবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে ? সাহাবীগণ বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (তিনি বললেন) তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন কর।’’(মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং ৮১)
বিশ্ব ভালবাসা দিবস কি
এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।
বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ইং সালে। কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি প্রথম চালু হয়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।
বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপা-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! বিশ্ব ভালবাসা দিবস না বলে বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস বললে অন্তত নামকরণটি যথার্থ হতো।
বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের ক্ষতিকর কিছু দিক
১. ভালবাসা নামের এ শব্দটির সাথে এক চরিত্রহীন লম্পটের স্মৃতি জড়িয়ে যারা ভালবাসার জয়গান গেয়ে চলেছেন, পৃথিবীবাসীকে তারা সোনার পেয়ালায় করে নীল বিষ পান করিয়ে বেড়াচ্ছেন।
২. তরুণ-তরুণীদের সস্তা যৌন আবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا وَاللَّهُ لَا يُحِبُّ الْمُفْسِدِينَ ‘‘আর তারা তো পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়। আর আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।’’(সূরা আল মায়িদাহ : ৬৪)
৩. নৈতিক অবক্ষয় দাবানলের মত ছড়িয়ে যাচ্ছে।
৪. নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি লাভ করছে। যারা ঈমানদারদের সমাজে এ ধরণের অশ্লীলতার বিস্তার ঘটায়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, إِنَّ الَّذِينَ يُحِبُّونَ أَنْ تَشِيعَ الْفَاحِشَةُ فِي الَّذِينَ آمَنُوا لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ ‘‘ যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি..।’’(সূরা আন-নূর :১৯) বস্তুত যে সমাজেই চরিত্র-হীনতার কাজ ব্যাপক, তথায় আল্লাহর নিকট থেকে কঠিন আযাব সমূহ ক্রমাগত অবতীর্ণ হওয়া অবধারিত, আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন : … لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا إِلَّا فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ وَالْأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلَافِهِمِ… ‘‘যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্লজ্জতা প্রকাশমান, পরে তারা তারই ব্যাপক প্রচারেরও ব্যবস্থা করে, যার অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ মহামারি, সংক্রামক রোগ এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়ে দেখা দিবে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে কখনই দেখা যায় নি।’’(ইবনু মাজাহ, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং-৪০০৯)
৫. তরুণ-তরুণীরা বিবাহ পূর্ব দৈহিক সম্পর্ক গড়তে কোন রকম কুণ্ঠাবোধ করছে না। অথচ তরুণ ইউসুফ আলাইহিস সালামকে যখন মিশরের এক রানী অভিসারে ডেকেছিল, তখন তিনি কারাবরণকেই এহেন অপকর্মের চেয়ে উত্তম জ্ঞান করেছিলেন। রোমান্টিক অথচ যুব-চরিত্রকে পবিত্র রাখার জন্য কী অতুলনীয় দৃষ্টান্ত! আল্লাহ জাল্লা শানুহু সূরা ইউসুফের ২৩-৩৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন এ ভাবে- ‘‘সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করল ও দরজাগুলো বন্ধ করে দিল এবং বলল, ‘আস।’ সে বলল, ‘আমি আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি আমার প্রভু; তিনি আমার থাকার সুন্দর ব্যবস্থা করেছেন। নিশ্চয়ই সীমালঙ্ঘনকারীরা সফলকাম হয় না। সে রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন দেখতে পেত। আমি তাকে মন্দ-কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ওরা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রীলোকটি পিছন হতে তার জামা ছিঁড়ে ফেলল, তারা স্ত্রীলোকটির স্বামীকে দরজার কাছে পেল। স্ত্রীলোকটি বলল, ‘যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ বা অন্য কোন মর্মন্তুদ শাস্তি ছাড়া আর কি দণ্ড হতে পারে? ইউসুফ বলল, ‘সে-ই আমার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করছিল।’ স্ত্রীলোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল, ‘যদি তার জামার সামনের দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী, কিন্তু তার জামা যদি পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক থেকে ছেঁড়া হয়েছে তখন সে বলল, ‘নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা, তোমাদের ছলনা তো ভীষণ। হে ইউসুফ! তুমি এটা এড়িয়ে যাও এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর; তুমিই তো অপরাধী। নগরের কিছু সংখ্যক নারী বলল, ‘আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎকাজ কামনা করছে, প্রেম তাকে উন্মত্ত করেছে, আমরা তো তাকে স্পষ্ট ভুলের মধ্যে দেখছি। স্ত্রীলোকটি যখন ওদের কানা-ঘুষার কথা শুনল, তখন সে ওদেরকে ডেকে পাঠাল, ওদের জন্য আসন প্রস্তুত করল, ওদের সবাইকে একটি করে ছুরি দিল এবং ইউসুফকে বলল, ‘ওদের সামনে বের হও।’ তারপর ওরা যখন তাঁকে দেখল তখন ওরা তাঁর সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। ওরা বলল, ‘অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! এ তো মানুষ নয়, এ তো এক মহিমান্বিত ফেরেশতা। সে বলল, ‘এ-ই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ। আমি তো তার থেকে অসৎকাজ কামনা করেছি। কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি সে যদি তা না করে, তবে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইউসুফ বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! এ নারীরা আমাকে যার দিকে ডাকছে তার চেয়ে কারাগার আমার কাছে বেশী প্রিয়। আপনি যদি ওদের ছলনা হতে আমাকে রক্ষা না করেন তবে আমি ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। তারপর তার প্রতিপালক তার ডাকে সাড়া দিলেন এবং তাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন। তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।(অনুবাদ, সূরা ইউসুফ : ২৩-৩৪)
৬. শরীরে উল্কি আঁকাতে যেয়ে নিজের ইয্‌যত-আব্রু পরপুরুষকে দেখানো হয়। যা প্রকাশ্য কবিরা গুনাহ। যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে তা আঁকা হয়, উভয়য়ের উপরই আল্লাহর লা‘নত বর্ষিত হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, لَعَنَ اللَّهُ الْوَاصِلَةَ وَالْمُسْتَوْصِلَةَ وَالْوَاشِمَةَ وَالْمُسْتَوْشِمَةَ * ‘‘যে ব্যক্তি পর-চুলা লাগায় এবং যাকে লাগায়; এবং যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে আঁকে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন।’’(বুখারী,কিতাবুল লিবাস,হাদিস নং৫৪৭৭) মূলত যার লজ্জা নেই, তার পক্ষে এহেন কাজ নেই যা করা সম্ভব নয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إِذَا لَمْ تَسْتَحِ فَاصْنَعْ مَا شِئْت ‘‘যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই করতে পার।’’(বুখারী, কিতাবু আহাদীসিল আম্বিয়া, হাদিস নং৩২২৫)
৭. ভালবাসা দিবসের নামে নির্লজ্জতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ ও খুন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, … وَلَا فَشَا الزِّنَا فِي قَوْمٍ قَطُّ إِلَّا كَثُرَ فِيهِمُ الْمَوْتُ… ‘‘যে জনগোষ্ঠীর-মধ্যেই ব্যভিচার ব্যাপক হবে, তথায় মৃত্যুর আধিক্য ব্যাপক হয়ে দেখা দেবে।’’(মুয়াত্তা মালিক, কিতাবুল জিহাদ, হাদিস নং-৮৭০)
উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসগুলোর ভাষ্য কতটা বাস্তব বর্তমান বিশ্বের বাস্তব চিত্র এর প্রমাণ বহন করে। অবাধ যৌন মিলনের ফলে “AIDS” নামক একটি রোগ বর্তমানে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এটা এমনি মারাত্মক যে, এ রোগে আক্রান্ত হলে এর কোন আরোগ্য নেই। কিছু পরিসংখ্যান দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে :
1. বিশ্বের ১৪০ কোটিরও বেশী লোক থেকে ১৯৮৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত এক লক্ষ এগার হাজারেরও বেশী “AIDS” রোগীর তালিকা পাওয়া গিয়েছে।’’(আব্দুল খালেক, নারী,(ই,ফা,বা.ঢাকা,১৯৮৪ইং) পৃ. ৯৬) 2. ১৯৯২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২,৪২,০০০ এইডস রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ১,৬০,০০০ মৃত্যু বরণ করেছিল। ১৯৯২ সালের গবেষণালব্ধ তথ্য মতে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ৫০ লক্ষ্য এইডস রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।(Baron& Byrne, Ibid., P. 329) 3. ৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৯৬ এর Time International’ পত্রিকায় পরিবেশিত তথ্য মতে, ৬৫ লক্ষ জীবন ছিনিয়ে নিয়েছে এই ঘাতক ব্যাধি। আগামী ৫ বৎসরে আরও ৩ কোটি লোক মারা যাবে এই রোগে।(মাসিক পৃথিবী, (ঢাকা, ডিসেম্বর, ১৯৯৯), পৃ. ৫) 4. বিশ্ব এইডস দিবস ২০০০-এর প্রাক্কালে জাতিসংঘ যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে বলা হয়েছে : ‘‘ইনজেকশনের মাধ্যমে মাদক সেবনকারী এবং সমকামিতা, ইতর রীতির যৌনতার মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপ, রাশিয়া, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, ল্যাটিন-আমেরিকা ক্যারিবীয় অঞ্চল ও এশিয়ায় এইডস দেখা দিয়েছে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশে প্রতি তিনজনের একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ এইডস আক্রান্ত। শিশুদের ৮০ ভাগ এই রোগের ভাইরাসে আক্রান্ত। আফ্রিকার উপ-সাহারা এলাকায় এ বছর ১০ লাখেরও বেশী লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে নতুন করে এইডস দেখা দিয়েছে। মাত্র একবছরে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্য প্রাচ্যেও নতুন করে এইডস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।’’(রয়টার্স, দৈনিক ইনকিলাব, (ঢাকা, ২রা ডিসেম্বর ২০০০ ইং) পৃ .১-২) 5. ৬. জাতিসংঘের দেয়া তথ্য মতে : ‘‘বিশ্বে ৩ কোটি ৬০ লাখ লোক এইডসে আক্রান্ত ২০০০ইং সনে ৫০ লাখ লোক নতুন করে এইডসে আক্রান্ত হয়েছে।’’(প্রাগুক্ত) 6. ৭. ‘‘বিশ্ব এইডস দিবসের আলোচনা সভায় (ঢাকা) বাংলাদেশের তৎকালীন সমাজকল্যাণ, প্রতি মন্ত্রী ড. মোজাম্মেল হোসেনের দেয়া তথ্য মতে, বাংলাদেশে এইডস ভাইরাস বহনকারী রোগীর সংখ্যা একুশ হাজারের বেশী।’’(দৈনিক ইনকিলাব, (স্টাফ রিপোর্টার, বিশ্ব এইডস দিবসে ঢাকায় আলোচনা সভা, ২রা ডিসেম্বর, ২০০০ ইং) পৃ.১)
সিফিলিস-প্রমেহ : বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আমেরিকার শতকরা ৯০% অধিবাসী রতিজ দুষ্ট ব্যাধিতে আক্রান্ত। সেখানকার সরকারী হাসপাতালগুলিতে প্রতি বৎসর গড়ে দুই লক্ষ সিফিলিস এবং এক লক্ষ ষাট হাজার প্রমেহ রোগীর চিকিৎসা করা হয়। (Encyclopedia Britannica, V. 23, P. 45.) এছাড়াও আমেরিকায় প্রতি বৎসর ত্রিশ-চল্লিশ হাজার শিশু জন্মগত সিফিলিস রোগে মৃত্যুবরণ করে। ( আঃ খালেক, নারী, (ঢাকা : ই.ফা. বা., ১৯৮৪ ইং), পৃ. ৯৬) Dr. Laredde বলেন— ফ্রান্সে প্রতি বৎসর কেবল সিফিলিস ও তদ-জনিত রোগে ত্রিশ হাজার লোক মারা যায়। (প্রাগুক্ত)
হার্পিস রোগ : ব্যভিচারের কারণে জননেন্দ্রিয়ে সৃষ্ট অত্যন্ত পীড়াদায়ক রোগ হলো Genital Herpes. মার্কিন জনসংখ্যার শতকরা দশ ভাগ (জনসংখ্যা ২৬ কোটি ধরলে তার ১০% হয় ২ কোটি ৬০ লক্ষ) এই রোগে আক্রান্ত। এটাই সব নয়। প্রত্যেক বৎসর প্রায় ৫০০,০০০ মানুষের নাম এই মারাত্মক হার্পিস রোগীদের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। (Baron & Byrne, Social psychology : Understanding Human Interaction, P. 329.)
৮. বিশ্ব ভালবাসা দিবসের এসব ঈমান বিধ্বংসী কর্ম-কাণ্ডের ফলে মুসলিম যুব-মানস ক্রমশ ঈমানি বল ও চেতনা হারিয়ে ফেলছে।
৯. মানুষের হৃদয় থেকে তাকওয়া তথা আল্লাহর ভয় উঠে যাচ্ছে।
প্রিয় মুমিন-মুসলিম ভাই-বোনেরা ! ভালবাসা কোন পর্বীয় বিষয় নয়। এটি মানব জীবনের সুখ-শান্তির জন্য একটি জরুরি সার্বক্ষণিক মানবিক উপাদান। সুতরাং আমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ বৃদ্ধির জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিখানো সার্বক্ষণিক পন্থাটি অবলম্বন করি। বিশ্ব ভালবাসা দিবসের নামে এসব ঈমান বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড হতে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে হেফাযত করুন। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যেন কাউকে ভালবাসি এবং শত্রুতাও যদি কারো সাথে রাখতে হয়, তাও যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই রাখি। আমীন !
লেখক: আ.স.ম শোয়াইব আহমাদ (পিএইচ.ডি) সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব
0 notes
gnews71 · 6 years
Photo
Tumblr media
ইসলাম আমার হৃদয়ের স্পন্দন :নওমুসলিম আমিনা পবিত্রতা ও শান্তি-পিয়াসি মানুষ ধর্মমুখি হচ্ছেন। ধর্ম মানুষের প্রকৃতিগত বিষয়। তাই তা ইতিহাস ও ভৌগোলিক সীমারেখার গণ্ডিতে সীমিত নয়। বরং ধর্ম নানা জাতি, গোত্র ও শ্রেণীর মধ্যে গড়ে তোলে ঐক্য ও সম্পর্ক। তাই যারা নিজের সত্য-পিয়াসি প্রকৃতির দিকে ফিরে যেতে চান ধর্ম তাদেরকে ফিরিয়ে দেয় পবিত্রতা ও শান্তি। আর এমনই পবিত্রতা ও শান্তি পাচ্ছেন সর্বশেষ এবং পরিপূর্ণ ঐশী ধর্ম ইসলামের মধ্যে ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’-র মত সত্য-পিয়াসি পশ্চিমা নাগরিকরা। পেশায় সাংবাদিক মিসেস ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ ছিলেন একজন গোঁড়া খ্রিস্টান ও খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক। পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি প্রচার করতেন খ্রিস্ট ধর্ম। তিনি মনে করতেন ইসলাম একটি কৃত্রিম ধর্ম এবং মুসলমানরা হল অনুন্নত ও পশ্চাদপদ একটি জাতি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটারের একটি ভুল তার জীবনের মোড় পুরোপুরি বদলে দেয়। বর্তমানে তিনি বিশ্ব মুসলিম নারী সমিতির সভানেত্রী হিসেবে মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষার কাজে মশগুল। খবর প্যরিস টুডে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের মানুষ। এক সময়ের খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক এই নারী আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের বহু মানুষের মনে জ্বালাতে পেরেছেন ইসলামের প্রোজ্জ্বল ও প্রদীপ্ত আলোর শিখা। তিনি বলেছেন, “ইসলাম আমার হৃদয়ের স্পন্দন ও আমার শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত রক্ত-ধারা এবং আমার সমস্ত প্রেরণার উৎস হলো এই ইসলাম। এ ধর্মের সুবাদে আমার জীবন হয়েছে অপরূপ সুন্দর ও অর্থপূর্ণ। ইসলাম ছাড়া আমি কিছুই নই।” মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ কম্পিউটারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নতুন টার্মের ক্লাসে ভর্তি হওয়ার জন্য নিবন্ধন করতে গিয়ে একটি ভুল বিষয়ের ক্লাসে ভর্তি হন। কিন্তু এ সময় সফরে থাকায় তিনি তার ওই ভুল বুঝতে পারেননি। পরে যখন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তখন জানতে পারেন যে ওই বিষয়ের ক্লাসে যোগ দেয়া ছাড়া তার জন্য অন্য কোনো উপায় নেই। আর ওই ক্লাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই আরব মুসলমান। যদিও মিসেস অ্যাসিলিমি আরব মুসলমানদের ঘৃণা করতেন কিন্তু বৃত্তির অর্থ বাঁচানোর জন্য তাদের সহপাঠী হওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ খোলা ছিল না তার। এ অবস্থায় তার মন খুব বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। কিন্তু তার স্বামী যখন বললেন, হয়ত স্রস্টা এটাই চেয়েছিলেন এবং তিনি হয়তো তোমাকে আরব মুসলমানদের মধ্যে খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের জন্য মনোনীত করেছেন; তখন খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়েই মিসেস অ্যাসিলিমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই ক্লাসে গেলেন। মার্কিন নও-মুসলিম ‘আমিনা অ্যাসিলিমি’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলমান সহপাঠীদের সঙ্গে যোগাযোগ হলেই নানা অজুহাতে তাদের কাছে খ্রিস্ট ধর্মের দাওয়াত দিতেন মিসেস অ্যাসিলিমি। তিনি তাদের বলতেন, ঈসা মাসিহ’র অনুসরণের মাধ্যমে তারা যেন নিজেদের মুক্তি নিশ্চিত করেন। কারণ, ঈসা মাসিহ মানুষকে মুক্তি দেয়ার জন্যই নিজেকে উতসর্গ করেছেন। অবশ্য তারাও অর্থাত আরব মুসলিম শিক্ষার্থীরাও বেশ ভদ্রতা ও সম্মান দেখিয়ে মিসেস ���্যাসিলিমির কথা শুনতেন। কিন্তু তাদের মধ্যে এইসব কথার কোনো প্রভাব পড়ত না। এ অবস্থায় মিসেস অ্যাসিলিমি ভিন্ন পথ ধরতে বাধ্য হন। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমি সিদ্ধান্ত নিলাম মুসলমানদের বই-পুস্তক দিয়েই তাদের কাছে এ ধর্মের ভুল চিন্তা-বিশ্বাস প্রমাণ করব। এই উদ্দেশ্যে আমার বন্ধুদের বললাম তারা যেন আমার জন্য পবিত্র কুরআনের একটি কপিসহ কিছু ইসলামী বই-পুস্তক নিয়ে আসেন যাতে এটা দেখানো যায় যে ইসলাম ধর্ম একটি মিথ্যা ধর্ম এবং তাদের নবীও আল্লাহর প্রেরিত পুরুষ নয়।” এভাবে মার্কিন সাংবাদিক মিসেস অ্যাসিলিমি বন্ধুদের কাছ থেকে পাওয়া পবিত্র কুরআন পড়া শুরু করেন। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে পাওয়া দুটি ইসলামী বইও পড়েন তিনি। এ সময় তিনি ইসলামী বই-পুস্তক পড়ায় এত গভীরভাবে নিমজ্জিত হন যে দেড় বছরের মধ্যে তিনি ১৫টি ইসলামী বই পড়েন ও পবিত্র কুরআনও দুই বার পড়া শেষ করেন। চিন্তাশীল হয়ে ওঠা মিসেস অ্যাসিলিমি বদলে যেতে থাকেন। মদপান ও শুকরের মাংস খাওয়া ছেড়ে দেন তিনি। সব সময়ই পড়া-শুনায় মশগুল থাকতেন এবং নারী ও পুরুষের অবাধ-মেলামেশার সুযোগ থাকত এমন সব পার্টি বা উৎসব অনুষ্ঠান বর্জনের চেষ্টা করতেন। সে সময়কার অবস্থা প্রসঙ্গে মিসেস অ্যাসিলিমি বলেছেন, “কখনও ভাবিনি যে ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করতে গেলে বিশেষ ঘটনা ঘটবে এমনকি আমার প্রাত্যহিক জীবন-ধারাও বদলে যাবে। সে সময়ও এটা কল্পনাও করতে পারিনি যে খুব শিগগিরই আমি আমার হৃদয়ের প্রশান্তির পাখাগুলো ও ঘুমিয়ে থাকা ঈমান নিয়ে ইসলামী বিশ্বাসের সৌভাগ্যের আকাশে উড্ডয়ন করব।” এর পরের ঘটনা বলতে গিয়ে মিসেস অ্যাসিলিমি বলেছেন, আমার আচরণে কিছু পরিবর্তন আসা সত্ত্বেও নিজেকে তখনও খ্রিস্টানই মনে করতাম। একদিন একদল মুসলমানের সঙ্গে সংলাপের সময় আমি যতই তাদের প্রশ্ন করছিলাম তারা অত্যন্ত দৃঢ়তা ও দক্ষতার সঙ্গে সেসবের জবাব দিচ্ছিলেন। পবিত্র কুরআন সম্পর্কে আমার অদ্ভুত সব মন্তব্য ও বক্তব্যের জন্য তারা আমাকে একটুও পরিহাস করেননি। এমনকি ইসলাম সম্পর্কে আমার তীব্র আক্রমণাত্মক বক্তব্য শুনেও তারা মোটেও দুঃখিত ও ক্রুদ্ধ হননি। তারা বলতেন, জ্ঞান মুসলমানের হারানো সম্পদ। আর প্রশ্ন হল জ্ঞান অর্জনের একটি পথ। তারা যখন চলে গেলেন মনে হল আমার ভেতরে যেন কিছু একটা ঘটে গেছে। এরপর থেকে মুসলমানদের সঙ্গে মার্কিন সাংবাদিক মিসেস অ্যাসিলিমির যোগাযোগ বাড়তে থাকে। আমি যখনই নতুন কোনো প্রশ্ন করতাম তখনই তারা আমার কাছে আরো কিছু নতুন প্রসঙ্গ তুলে ধরতেন। এ অবস্থায় একদিন একজন মুসলিম আলেমের সামনে সাক্ষ্য দিলাম: “আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।–আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রভু বা উপাস্য নেই এবং আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর রাসূল।” মুসলমান হওয়ার পর হিজাব বা পর্দা বেছে নেন মিসেস অ্যাসিলিমি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের ও সন্তানের মালিকানারও প্রশ্ন চলে আসে। এমনকি বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিচারক তাকে তার দুই সন্তান ও ইসলামের মধ্যে যে কোনো একটিকে বেছে নিতে বললে মহাদ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েন মিসেস অ্যাসিলিমি। একজন মমতাময়ী মায়ের জন্য সন্তানের দাবী ত্যাগ করা তো দূরের কথা, তাদের কাছ থেকে একদিনের জন্য দূরে থাকাও অশেষ কঠিন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসলামের প্রতি ও মহান আল্লাহর প্রতি ভালবাসার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মার্কিন নও-মুসলিম মিসেস অ্যাসিলিমি। আসলে ওই অবস্থায় দুই বছর ধরে ইসলাম সম্পর্কে তার গবেষণা ও আল্লাহর ওপর নির্ভরতাই তাকে শক্তি যুগিয়েছে। তার মনে পড়ে কুরআনে উল্লেখিত হযরত ইব্রাহীম (আ.)’র সন্তান কুরবানি দেয়ার জন্য আল্লাহর নির্দেশ পালনের ঘটনা। মনে পড়ে কুরআনের এই আয়াত: “যে ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছার অনুগত, সে কি ঐ ব্যক্তির সমান হতে পারে, যে আল্লাহর ক্রোধ অর্জন করেছে? বস্তুতঃ তার ঠিকানা হল দোযখ। আর তা কতইনা নিকৃষ্ট অবস্থান!” মার্কিন নও-মুসলিম মিসেস অ্যাসিলিমি মুসলমান হওয়ার পর আমেরিকায় ইসলাম প্রচারে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। কয়েক বছরের প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি মুসলমানদের জন্য আরবী ভাষায় ঈদের শুভেচ্ছার সরকারি স্ট্যাম্প প্রকাশ করতে মার্কিন সরকারকে সম্মত করেন। মিসেস আমিনা অ্যাসিলিমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে ও শহরে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তার অনুভূতি তুলে ধরে বক্তব্য বা ভাষণ দিয়েছেন। হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে-আসা এইসব ভাষণ শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এইসব প্রচেষ্টার অন্যতম সুফল হিসেবে একদিন তার দাদী ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এরপর তার বাবা, মা ও বোনও মুসলমান হন। এর কিছু কাল পর তার সাবেক স্বামীও জানান যে তিনি চান তাদের মেয়েরা মায়ের ধর্মই অনুসরণ করুক। তিনি মেয়েদেরকে কেড়ে নেয়ার জন্য সাবেক স্ত্রী তথা অ্যাসিলিমির কাছে ক্ষমাও চান। আর অ্যাসিলিমিও তাকে ক্ষমা করে দেন। এভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের অপরাধে একদিন যারা তাকে ত্যাগ করেছিল তারা সবাই তাদের ভুল বুঝতে সক্ষম হয় ও সত্যকে স্বীকার করে নেয়। প্রাণপ্রিয় সন্তানদের ফিরে পাওয়াকে অ্যাসিলিমি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য আরও একটি বড় বিজয় বলে মনে করেন। এভাবে আল্লাহ যাকে চান তাকে ঈমানের মহাসম্পদে সমৃদ্ধ করেন। তিনি জানেন কারা সত্যের ও আল্লাহর প্রেমিক।
0 notes